বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়ে থাকেন। আন্ডারগ্রাজুয়েট, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি বা ডক্টরেট ডিগ্রি প্রোগ্রামে অধ্যায়ন ইচ্ছুক প্রায় সব শিক্ষার্থীই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অথবা আংশিক মূল্যের স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যেতে চান বাইরের দেশে। তবে এই স্কলারশিপ লাভের জন্য বিভিন্ন দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তানুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। যা আপনাকে অন্তত এক বছর বা ৬ মাস আগে থেকে সংগ্রহে রাখতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সত্যায়িত করে রাখতে হবে। আজ আমরা স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে জানবো।
বৃত্তির আবেদন ফর্ম- প্রথম পদক্ষেপে, আপনাকে স্কলারশিপের আবেদন ফর্মটি পূরণ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে আবেদন ফর্ম অনলাইনে পূরণ করে জমা দেয়া যায়, আবার অনেক ক্ষেত্রে তা ডাউনলোড করে হার্ডকপি চাহিদা অনুযায়ী ঠিকানায় জমা দিতে হয়।
একাডেমিক সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট- স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আপনার বিগত সমস্ত একাডেমিক ডিগ্রির ( উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, এবং বিশ্ববিদ্যালয়) সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট এর প্রতিলিপি প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই নথিগুলি অবশ্যই আপনাকে দেশে সত্যায়িত করে নিতে হবে।
পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি- আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। যা আপনার আবেদন জমা দেয়ার পরে কমপক্ষে ৬ মাসের জন্য বৈধ হতে হবে। আবার অনেক দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় আপনার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান করা কপি চাইতে পারে।
ইংরেজি দক্ষতার চিঠি- আপনার ইংরেজি দক্ষতা কেমন সে বিষয়ের উপর একটি বিবৃতি। চিঠিতে লেখকের/প্রতিষ্ঠানের স্পষ্ট বিবৃতি থাকবে যে তিনি আপনাকে চিনেন এবং আপনি যে পর্যাপ্ত ইংরেজি দক্ষতার অধিকারী সে বিষয়ে তিনি সত্যতা প্রদান করবেন।
স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP)- অনেকেই বলে থাকে সব কিছুর উর্ধ্বে থাকে SOP বা Standard Operating Procedure. এমন অনেকেই আছেন সিজিপিএ ভালো না, IELTS ভালো না কিন্তু শুধুমাত্র অসাধারণ SOP লিখে বাজিমাত করেছেন। তাই কিভাবে একটি ভালো SOP তৈরি করা যায় তা নিয়ে আগে থেকেই ভাবনা-চিন্তা করুন। নিজের জানাশোনা বাড়ান, যারা ইতিপূর্বে বিদেশ গমন করেছেন উচ্চশিক্ষার জন্যে তাদের কাছে তাদের SOP নিয়ে জিজ্ঞেস করুন।
রিকমেন্ডেশন লেটার- স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য রিকমেন্ডেশন একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সব ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটেই এই ফরম আপলোড করা থাকে। এই ফরমের সঙ্গে ইচ্ছে করলে নিজের লেখা পেপারও যুক্ত করতে পারবেন। তবে কার কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন নিতে হবে সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
সিভি- স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনার একটি জীবন বৃত্তান্ত (সিভি) জমা দেয়ার প্রয়োজন হবে। সিভিতে আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য যেমন- পেশাগত অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা, আকর্ষণীয় শখ, ভাষা দক্ষতা, কম্পিউটার দক্ষতা, রেফারেন্স, অঙ্গীকারনামা যুক্ত রাখতে পারেন।
ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর- আপনার স্যাট, জিএমএটি, জিআরই, আইইএলটিএস এবং টোফেলসহ একটি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার স্কোরের সনদ জমা দিতে হবে। তাই আবেদনের আগেই আপনাকে ভাষা দক্ষতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সনদ সংগ্রহ করে নিতে হবে।
পিতামাতার আর্থিক তথ্য- বিভিন্ন দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তানুযায়ী আপনাকে আংশিক স্কলারশিপের ক্ষেত্রে আপনার পিতামাতার আর্থিক তথ্য অথবা আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রমাণ দেখাতে হতে পারে।
মেডিক্যাল রিপোর্ট বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রমাণপত্র- আপনার নিজের দেশের অনুমোদিত মেডিক্যাল সেন্টার বা হাসপাতালের সাইনসহ মেডিক্যাল রিপোর্টে জমা দিতে হবে। তবে এটি দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী।
গবেষণা প্রস্তাব- আপনি যদি মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার জন্য স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য ইচ্ছুক হোন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি গবেষণা প্রস্তাবপত্র জমা দিতে হবে।