অনেকেরই দীর্ঘদিনের স্বপ্ন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা। বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যেতে চাইলে তার জন্য হলে প্রস্তুতি শুরু করতে হয় বেশ আগে থেকে। কীভাবে একটু একটু করে আপনি প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখতে পারেন তা জেনে নিন আজকের এই লেখা থেকে।
(১) সার্টিফিকেটের নাম:
আপনার নাম এবং আপনার পিতামাতার নামের সাথে মিল রেখে সার্টিফিকেটে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করবেন। হতে পারে নামের বানানে ভুল বা অন্য কিছু, এ সময়ে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন আপনার পিতামাতার ভোটার আইডিতে যে নাম আছে ঔ নাম ই যেন সার্টিফিকেটে থাকে। মোট কথা আপনার জন্মসনদ, সার্টিফিকেটে বাবা-মার এনআইডি অনুযায়ী নাম থাকতে হবে।
(২) পাসপোর্ট তৈরি:
পাসপোর্ট তৈরির সময় পূর্বের সার্টিফিকেটের মতো নাম এবং স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার দিকে খেয়াল রাখবেন। এমন যেন না হয় জন্মসনদে আছে বর্তমান ঠিকানা বরিশাল কিন্তু পাসপোর্টে কোনোভাবে এসে গেছে নোয়াখালী।
( ১ও২ নং পয়েন্টে কোনোভাবে ভুল হলে এগুলো সংশোধন করে নিতে হবে। আপনি বিদেশ পড়তে যান বা না যান এমনিতেই এটি জরুরি এবং সংশোধনও একটু সময় সাপেক্ষ বিষয়।)
(৩) সার্টিফিকেট:
স্নাতক প্রোগ্রামে পড়তে যেতে চাইলে এসএসসি,এইচএসসি এর নম্বরপত্র এবং সার্টিফিকেট বোর্ড থেকে সংগ্রহ করা এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে পড়তে যেতে চাইলে অনার্সের সার্টিফিকেট নিজ সংগ্রহে রাখা।
(৪) সার্টিফিকেট সত্যায়ন:
সার্টিফিকেট সংগ্রহের পর এগুলো শিক্ষা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করতে হবে।
(৫) আইইএলটিএসের প্রস্তুতি :
আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রিপারেশন টা একটু আগে থেকেই নেওয়া ভালো, কারন অনেকের কাঙ্খিত স্কোর তুলতে অনেক বেশি সময় লেগে যায় এবং এই সময়ের কারণে, অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন মিস করে ফেলে, যার জন্য এডুকেশন গ্যাপ বেড়ে যায় এবং ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আইইএলটিএসের প্রস্তুতি শুরু করবেন যেভাবে
(৬) অন্যান্য পরীক্ষা:
স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা থাকলে আন্ডার-গ্র্যাজুয়েটের স্টুডেন্টদের জন্য SAT/ ACT পরীক্ষা এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য GRE/ GMAT পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আগে থেকে নেওয়া ভালো।
(৭) রেকমেন্ডেশন লেটার:
আপনার পরিচিত বা যে সকল শিক্ষকরা আপনাকে ভালো জানে, এই সকল শিক্ষকদের মধ্য থেকে দুইজন টিচারের রেকমেন্ডেশন লেটার সংগ্রহ করে রাখা।
(৮) SOP লেখার প্রিপারেশন:
বিদেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য SOP লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি প্রিপারেশন অনেক আগে থেকেই নেওয়া ভালো। যে কিভাবে আপনি এটাকে লিখবেন, এর জন্য অভিজ্ঞ ভাইদের সহযোগিতা নেওয়া বা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ বা অন্য কোথা থেকে সহযোগিতা নেওয়া এবং নিজের মতো করে এটাকে প্রস্তুতি নেওয়া যাতে SOP ভাষাটা নিজের মতো করে হয়।
(৯) বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজা:
ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মিল রেখে আপনি যে দেশে পড়তে যেতে চাচ্ছেন ওই দেশের মিনিমাম পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করে রাখা এবং যে সাবজেক্টে পড়তে যেতে চাচ্ছেন ওই সাবজেক্টটা যেন আপনার পূর্বের পড়া সাবজেক্ট এর সাথে মিল খায়, ধরেন আপনি সায়েন্স থেকে এইচএসসি পাশ করছেন সুতরাং আপনাকে এমন কোন সাবজেক্টই পরবর্তীতে চয়েজ করতে হবে যেটা সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মিল খায় বা ব্যবসা শিক্ষা বিষয় থেকে আগে পড়াশোনা করে থাকলে এমন সাবজেক্ট পছন্দ করতে হবে যেটা যেন ব্যাবসা শিক্ষার সাথে মিল থাকে।
(১০) বাজেট:
আপনার পছন্দের শহর সহ সব কিছু বিষয় মাথায় রেখে মিনিমাম পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ আগে থেকে পছন্দ করে রাখা এবং স্কলারশীপ ব্যতিত বাহিরের দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাইলে টিউশন ফি, বিমান ভাড়া, ব্লক মানিসহ অন্যান্য বিষয়সমূহ তালিকা করে একটি নিজস্ব বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।
(১১) আবেদনের সময়:
আপনি যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করবেন সে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ডেডলাইনের দিকে খেয়াল রাখা এবং সে অনুযায়ী আগে থেকেই আবেদন করা।
(১২) ভলেন্টিয়ার সংগঠনে যুক্ত:
আপনি যদি খুব সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন করে সিলেক্ট হতে চান বা স্কলারশীপ পেতে চান এবং সহজেই ভিসা পেতে চান তাহলে কিছু ভলেন্টিয়ার সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা এবং তার যথেষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করে রাখা।
(১৩) রান্না শিখে রাখা:
বিদেশে গেলে বেশিরভাগ সময় আপনাকে নিজেকে নিজের রান্না করে খেতে হবে সুতরাং আগে থেকেই দেশ থেকে রান্না শিখে যাওয়া টা ভালো।
(১৪) ড্রাইভিং স্কিল:
যদি সম্ভব হয় ড্রাইভিং শেখা তাহলে শিখে ফেলুন, ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে রাখুন এবং যদি আরও সম্ভব হয় তাহলে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে রাখতে পারেন।
(১৫) কম্পিউটার স্কিল:
যদি সম্ভব হয় তাহলে কম্পিউটারে নিজের স্কিল দেশ থেকে আপগ্রেড করে যান যেমন microsoft-office, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্টের কাজ শেখা এবং সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে রাখতে পারেন এটা বিদেশে আপনাকে অনেক সাপোর্ট দিবে।