কাগজপত্র তৈরি করে জমা দিব, ভিসা হলে চলে যা্ব। এর বাইরে আবার কী?
এর বাইরে আরও অনেক কিছু আছে যা জানতে হবে এবং শিখতে হবে। যেমন- ইংলিশ টেস্ট, ব্যাংক ব্যালেন্স, ড্রাইভিং বা গাড়ি চালানোর লাইসেন্স ইত্যাদি।
তিন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি ছাড়া অনেক ধরনের বিষয়ই দরকার হতে পারে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ‘অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনাঃ কমপ্লিট গাইড’ বইয়ের লেখক জসীম উদ্দিন রাসেল।
ইংরেজিতে দক্ষতা
ব্যাচেলর বা মাস্টার্স - আপনি যা—ই করতে যান না কেনো ‘ইংলিশ টেস্ট’ দিতে হবে। কোনো বিষয়ে পড়তে যাচ্ছেন এবং কোন ডিগ্রি করতে যাচ্ছেন এর ওপর ইংলিশ টেস্টে কত স্কোর লাগবে তা নির্ভর করে।
তাই প্রথমেই জানতে হবে, যে বিষয়ে পড়তে যেতে চাইছেন সেটাতে কত স্কোর লাগবে এবং নিজে এই স্কোর পেতে সক্ষম কিনা।
আপনি কী আইইএলটিএস দেবেন, নাকি পিটিই দেবেন? কোনটা সুবিধাজনক সেটা ঠিক করে প্রস্তুতি নিতে হবে।
যদি ইংরেজি ভীতি থাকে বা ইংরেজিতে দুর্বলতা থাকে তাহলে এই ভীতি/ দুর্বলতা কাটাতে বেশ সময় লাগবে। আর নিয়মিত চর্চা করে যেতে হবে।
একটি পরিকল্পনা করে তারপর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করুন।
যে কোনো ভাষাই আসলে চর্চার ওপর নির্ভর করে। ইংরেজি বলার এবং লেখার জন্য যে শব্দগুলো জানা দরকার তা ইতোমধ্যেই দখলে আছে। তবে প্রয়োগ করতে গেলে আটকে যেতে হয়।
এটি ধরে নিতে পারেন, কাঙ্ক্ষিত স্কোর তুলতে অন্যদের যদি তিন মাস লাগে তাহলে আপনার না হয় পাঁচ মাস লাগবে। এই দুই মাস বেশি হয়ত পরিশ্রম করতে হবে।
ব্যাংক ব্যালেন্স
ইংরেজি স্কোর যদি তুলতে পারেন তারপরেই ব্যাংক ব্যালেন্সের দরকরি কাগজপত্র তৈরি করার বিষয় আসে।
ব্যাংক ব্যালেন্স কত দেখাতে হবে সেটা কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।
কোন শহরে পড়তে যাবেন, কোন বিষয়ে পড়তে যাবেন, যদি ‘স্পাউস’ এবং ছেলেমেয়েসহ যেতে চান তাহলে ব্যাংক ব্যালেন্সের পরিমাণ কম—বেশি হতে পারে।
সব দেশে সব শহরে জীবনধারনের খরচ এক রকম নয়। যেমন- সিডনি থেকে অ্যাডিলেইডে জীবনযাত্রার খরচ ১৩ শতাংশ কম।
তাই সিডনি না গিয়ে অ্যাডিলেইডের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তাহলে ব্যাংক ব্যালেন্স কিছুটা কম দেখাতে হবে।
আবার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান সেটার ওপর ব্যাংক ব্যালেন্স নির্ভর করে অনেকটা।
যত শীর্ষ তালিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাবেন ব্যাংক ব্যালেন্স ততই বেশি দেখাতে হবে।
কারণ তালিকায় শীর্ষে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি বেশি হয়। তাই ব্যাংক ব্যালেন্সও বেশি দেখাতে হবে। সঙ্গে পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী ব্যাংক ব্যালেন্সও বাড়বে।
পড়ালেখার বিষয়, শহর, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি ঠিক করে তারপর ব্যাংক ব্যালেন্স নির্ণয় করতে হবে।
এক্ষেত্রে কোন আর্থিক সম্পদগুলো দেখানো যাবে সেটা জানতে হবে। যেমন- বাড়ি, গাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, শেয়ারে বিনিয়োগ ইত্যাদি ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে দেখানো যাবেন না।
বাবা—মায়ের নামে যা আছে সেটা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে দেখানো যায়।
ড্রাইভিং, রান্না এবং অন্যান্য
বাংলাদেশে মা—বাবার সঙ্গে বা পরিবারের সঙ্গে থাকার ফলে অনেক কাজই হয়ত করতে হয় না। বাসায় কাজের লোক ছিল, ড্রাইভার ছিল, তারাই সব কাজ করে দিত।
তবে বিদেশে আপনি একা যাবেন। সাহায্য করার জন্য সেখানে কেউ থাকবে না। আর এসব কাজ করে দেওয়ার জন্য কাউকে পাবেন না। রান্না করা থেকে শুরু করে বাজার করা, কাপড় ধোয়া ইত্যাদি যাবতীয় কাজ নিজেকেই করতে হবে।
বিদেশে কিছু কাজ করতে গেলে গাড়ি আছে কি-না তা জানতে চায়। আবার গাড়ি থাকলে বিদেশে অনেক সুবিধাও হয়।
বাস, ট্রেন, ট্রামে যাতায়াত করা যায় বটে। উন্নত দেশগুলোতে অনেকেই গণপরিবহন ব্যবহার করেন। তবে ড্রাইভিং জানলে বাড়তি সুবিধা যেমন হয় তেমনি আয়ের পথও খুলে যায়।
তাই বাংলাদেশ থেকে ড্রাইভিং শিখে লাইসেন্স নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।